ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) প্রযুক্তি ইউনিট পরিচিতি - কী ও কীভাবে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) প্রযুক্তি ইউনিট পরিচিতি - কী ও কীভাবে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত প্রযুক্তি ইউনিটের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ১৮ মে অনুষ্ঠিত হবে। এই ইউনিটে ভর্তিচ্ছুদের মনে সচরাচর যেসব প্রশ্নের উদয় হয় তা জানাতেই আজকের এই লেখাটি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রযুক্তি ইউনিট - কী ও কাদের জন্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তি ইউনিট আলাদা ও স্বতন্ত্র একটি ইউনিট। এই ইউনিটে শুধুমাত্র বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবে। ঢাবি অধিভুক্ত ৭ কলেজের মতোই এই প্রযুক্তি ইউনিটেও আছে অধিভুক্ত সাতটি কলেজ, এই কলেজগুলোর সমন্বিত ভর্তি প্রকৃয়ার নামই প্রযুক্তি ইউনিট।

ঢাবি প্রযুক্তি ইউনিট অধিভুক্ত কলেজ কোনগুলো?

এই ইউনিটের অধীনে ৭ টি কলেজ রয়েছে। তার মধ্যে ৪ টি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ১ টি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এবং ১ টি টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট, ১ টা ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউট । ৫ টি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের মধ্যে ৩ টি সরকারি কলেজ এবং ১ টি বেসরকারি কলেজ, ১ টি বেসরকারি ইন্সটিটিউট। এবং টেক্সটাইল রিলেটেড ১ টি কলেজ পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ এবং বাকি আর একটি বেসরকারি।

ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ

EEE(60) 2008

CE(60) 2014

CSE(60) 2017

ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ

EEE(60) 2013

CE(60) 2013

CSE(60) 2017

বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ

EEE(60) 2017

CE(60) 2017

নিটার - জাতীয় বস্ত্র ও গবেষণা ইনস্টিটিউট

টেক্সটাইল -(২৯০) 2010

+ আইপিই- (১৪০) 2016

+ FDAE (৭৫) 2017

+ EEE (৬0) 2019

+ CSE (১২০) 2019

= ৬৮৫

শ্যামলী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ

Textile(120) 2010

+ FDAE (30) 2020

+ EEE (50) 2020

+ CSE (50) 2020

= 250

কে এম হুমায়ুন কবির ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ

সিভিল (৫০) 2019

সিএসই (৩০) 2021

সাইক ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি এন্ড ম্যানেজমেন্ট

সিভিল (২০) 2021

সিএসই (২০) 2021

ইইই (২০) 2021

ঢাবি প্রযুক্তি ইউনিটের আসন সংখ্যা কত?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রযুক্তি ইউনিটের মোট আসন সংখ্যা ১৫৫৫ টি। তার মধ্যে সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সিট ৪৮০ টি, নিটারে (পিপিপি) ৬৮৫ টি এবং বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সিট ২৯০ টি। নিটার (জাতীয় বস্ত্র ও গবেষণা ইনস্টিটিউট) এ ৬৮৫ টি, ময়মনসিংহ ও ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ১৮০ টি করে, বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ১২০ টি এবং শ্যামলী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ২৫০ টি, কে এম হুমায়ুন কবির ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ৮০ টি সিট, সাইক ইন্সটিটিউট অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজিতে ৬০ টি।

ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলা কি পাবলিক না প্রাইভেট নাকি ন্যাশনালের মতো?

– প্রথমে পাবলিক বলতে আমরা কি বুঝি?

অবশ্যই পাবলিক বলতে বুঝিয়েছ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়,পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হলো বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন অনুমোদিত সরকারি এবং স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। যার প্রধান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি।

বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ মূলত তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে: পাবলিক (সরকারি মালিকানাধীন), বেসরকারি (বেসরকারি মালিকানাধীন) এবং আন্তর্জাতিক (আন্তর্জাতিক সংগঠন কর্তৃক পরিচালিত) বিশ্ববিদ্যালয়।

বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা প্রদানের উদ্দেশ্যে বর্তমানে ৫৮টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্বশাসিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, আর প্রযুক্তি ইউনিট অধিভুক্ত কলেজগুলো হলে বিশেষায়িত কলেজ। সবাই নিজেদের প্রতিষ্ঠানের স্বকীয়তা বজায় রেখে চলে।

ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলার সার্টিফিকেট কেমন?

ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সার্টিফিকেট কি ঢাবি দিবে? এ বিষয়টা আজকে ক্লিয়ার করবো, এই প্রশ্নের পিছনে স্টুডেন্টরা একটা উত্তর ই আশা করে যে সার্টিফিকেট টা ঢাবি দিবে আর এতেই তারা বলে আলহামদুলিল্লাহ, অনেকে খুশি হয় এখানে পড়েই ঢাবির সার্টিফিকেট টা পাওয়া যাবে আর কি লাগে, এতেই সব।

আবার অনেকে জিজ্ঞেস করে ভাই ঢাবির অরজিনাল সার্টিফিকেট টা তো দিবে? যাই হোক এর পরিষ্কার উত্তর টা আজকে পেয়ে যাবে। তার আগে ১ টা প্রশ্ন করবো, আচ্ছা তোমরা কি জানো মেডিকেল কলেজের সিস্টেম টা কি?

এখানে সার্টিফিকেট টা কে দেয়,সমাবর্তন কই হয় অথবা এরা কার অধিভুক্ত(তোমরা যাকে আন্ডার বলো)?

না জানলে বিষয় টা বলেই দেই, বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মেডিকেল কলেজ DU/RU/CU/SUST এর অধিভুক্ত, ভার্সিটি গুলোর ফ্যাকাল্টি অব মেডিসিনের আন্ডার এ এদের অধিভুক্তি।

এখন কখনো কি এখান থেকে পাস করে কাউকে বলতে শুনেছ এমবিবিএস পাস করেছি ঢাবি থেকে বলতে?তাঁরাও সমাবর্তন সেসব ভার্সিটি তেই করে। আর তাদের সার্টিফিকেট টা সেসব ভার্সিটি ই দেয়।

অরিজিনাল ই দেয় ,নীলক্ষেতের বানানো ডুপ্লিকেট না তবে এবার জানতে হবে তোমাকে ঢাবি আসলে কাদের কে নিজের পরিচয়ে স্থান দেয়-

ঢাবিতে যারা চান্স পেয়ে হলের অ্যালোটমেন্ট নির্দিষ্ট ফ্যাকাল্টির জন্য পায় তারাই ঢাবির নিজস্ব ফ্যাকাল্টির নিজস্ব স্টুডেন্ট, এর বাহিরে ওই ঢাবির লোগো তে কখনোই তুমি ঢাবিয়ান বলিতে অথবা এর থেকে চাকুরি গত ও কোনো আলাদা সুবিধা পাবা না।

এবার আসি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের বেলায় কী হয়- আগে রুয়েট/চুয়েট/কুয়েট যখন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ছিলও তখন তারা মেডিকেল কলেজের মতোই ছিলো, আর পরিচয় তাও তেমন ই দিতো।

সার্টিফিকেট টা কে দিবে তা নিয়েও মাথা ব্যাথা ছিলো না তারা বলতো তারা ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করছে ওমুক ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে, জব সেক্টরে ওই কলজের নাম টা দেখেই প্রায়োরিটি দিতো।

আর এখন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সিস্টেম থাও সেইম, আগের মতোই ভার্সিটির ফ্যাকাল্টির আন্ডারেই আছে স্পেশাল কিছুই না।

কিন্তু তোমরা যারা অধিভুক্ত/সার্টিফিকেট টা ঢাবি দিবে তাই আহামরি ভাবছো। এমন ভাবনা টা যেমন মেডিকেল ভাবতে ভুলে যাও তেমন এখানেও ভাবতে হবে আর এটাই সত্যি।

এখানে হিসেব করতে হবে টোটালি মেডিকেল কিংবা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হিসেবে। নট আন্ডারে অথবা ঢাবির সার্টিফিকেট টা পাবো ওই ভাবে।আশা করি বিষয়টা ক্লিয়ার হয়ে গেছে।

প্রযুক্তি ইউনিটে কোন কোন বিষয়ে পরীক্ষা হয়? মানবন্টন

চারটি বিষয়ের উপর পরীক্ষা হবে। 

  • পদার্থ, 
  • রসায়ন, 
  • গণিত ও 
  • ইংরেজি

১২০ নম্বরের পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে পদার্থ ৩৫, রসায়ন ৩৫, গণিত ৩৫ এবং ইংরেজি ১৫। আর পাস মার্ক ছিল ৪৮। জিপিএর উপর ৮০ মার্কস রয়েছে। এর মধ্যে এসএসসির জিপিএর উপর ৪০ মার্কস এবং এইচএসসির জিপিএর উপর ৪০ মার্কস।

ভর্তির আবেদন যোগ্যতা

ভর্তিচ্ছু আবেদনকারীদের এসএসসি ও এইচএসসি উভয় ক্ষেত্রেই চতুর্থ বিষয় সহ ন্যূনতম জিপিএ ৩.০০ সহ মোট জিপিএ ৬.৫০ (ন্যূনতম) থাকতে হবে।

প্রযুক্তি ইউনিটে নেগেটিভ মার্কিং আছে?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত প্রযুক্তি ইউনিট ভর্তি পরীক্ষায় কোনো নেগেটিভ মার্কিং নেই। প্রতিটি প্রশ্নের মান ১।

আবেদনের সময় ও ফি

ঢাবি প্রযুক্তি ইউনিট ভর্তি  পরীক্ষার আবেদন শুরু ২২ মার্চ থেকে এবং আবেদন শেষ ২৫ এপ্রিল। ভর্তি পরীক্ষা ১৮ মে সকাল ১১.০০ থেকে ১২.৩০ টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।

আবেদন ফি ৮৫০ টাকা। 

নবীনতর পূর্বতন

ছবি: দ্য ডেইলি পাবলিকিয়ান