ব্যবসায় শিক্ষা/বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতির গাইডলাইন

ব্যবসায় শিক্ষা শাখার বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা প্রস্তুতি সি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা C ইউনিট বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি


ব্যবসায় শিক্ষা/বাণিজ্য শাখার শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য এক স্বপ্নের নাম বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের বেশিরভাগ ব্যবসায় শিক্ষা শাখার শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগের অনেক শিক্ষার্থীও ভবিষ্যতে একটি সুন্দর কর্পোরেট ক্যরিয়ার গড়ার লক্ষ্যে স্বপ্ন দেখে অর্নাসে বা স্নাতকে দেশের কোন সুপরিচিত স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিজের বিবিএ গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করার। কিন্তু বিধি বাম প্রতি বছর এইচএসসি বা উচ্চমাধ্যমিক পরিক্ষায় যে পরিমাণ বাণিজ্য বিভাগ বা কর্মাসের ছাত্র ছাত্রী জিপিএ ৫.০০, এ প্লাস পায় তার সিকিভাগ আসন ও নেই দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে বিবিএর জন্য। যে পরিমাণ সিট বা আসন রয়েছে তার মধ্যে থেকে আবার উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আসন বরাদ্দ থাকে বিজ্ঞান বিভাগ, মানবিক বিভাগ ও কোটার শিক্ষার্থীদের জন্য। সবশেষে গিয়ে কর্মাসের ছাত্র ছাত্রীদের আসন সংখ্যা নেমে আসে বিবিএ এর ক্ষেত্রে তলানিতে। সেই সাথে মানবিক কিংবা বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার সাথে উচ্চমাধ্যমিকের পড়ার বেশিরভাগ মিল থাকলেও বাণিজ্য বিভাগের ক্ষেত্রে এর উল্টোটা। পরিক্ষার প্রশ্ন উচ্চমাধ্যমিক বা এইচএসসি পরীক্ষার সিলেবাস অনুযায়ি হলেও আলিম বা এইচএসসির প্রশ্নপত্রের ধরণ বা প্যার্টান সম্পুর্ন ভিন্ন বা আলাদা। ব্যবসায় শিক্ষা শাখা বা বাণিজ্য বিভাগের উচ্চমাধ্যমিকের প্রশ্ন পদ্ধতি এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন পদ্ধতি দুটো যেন পৃথিবীর দুই মেরু। উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর মতো বিস্তর এক প্রভেদ হলো উচ্চমাধ্যমিকের প্রশ্ন পদ্ধতি ও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির প্রশ্ন পদ্ধতি।


কর্মাসের শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা অনেকের কাছেই এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম। এই কম্পিটিটিভ ও চ্যালেঞ্জিং পরিক্ষায় নিজেকে মেধাতালিকায় এগিয়ে রেখে প্রতিটা ছাত্র ছাত্রীকে নিজের ইনিশিয়াল লক্ষ্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএতে নিজের একটি আসন বা সিট দখল করা। আর এর জন্য প্রয়োজন ভালো গাইডলাইন সুন্দর ও গোছানো একটি পথ। বেশিরভাগ ব্যবসায় শিক্ষার শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষা এবং এইচএসসির সময় সঠিক গাইডলাইনের একটা অভাববোধ করে থাকে। কেননা দেশে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল, ডেন্টাল, ইজ্ঞিনিয়ারিং এর জন্য অসংখ্য গাইডলাইন দেয়ার প্রতিষ্ঠান কোচিং সেন্টার রয়েছে। পাশাপাশি মানবিক বিভাগ বা আর্টসের ও একই অবস্থা কিন্তু ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএতে সীমিত সংখ্যক আসন সংখ্যার জন্য কমার্সের ছাত্র ছাত্রীদের জন্য ভালো কোচিং সেন্টারের এবং গাইডলাইন দেয়ার প্রতিষ্ঠান সংখ্যা হাতে গোনা কয়েকটি। তার মধ্যেও বেশিরভাগ অবস্থিত দেশের প্রাণকেন্দ্র রাজধানী ঢাকায়। তাই সঠিক গাইডলাইনের অভাবে অনেক শিক্ষার্থীর স্বপ্ন অনেক সময় স্বপ্নই থেকে যায়।


উচ্চমাধ্যমিক|HSC থেকে কিভাবে প্রিপারেশন শুরু করবো

বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের মাঝে সবচেয়ে বেশি যে প্রশ্নটা শুনা যায় বা দেখা যায় তা হলো কি পড়বো , কিভাবে পড়বো, কতোটুকু পড়বো, কার কাছে পড়বো, কোথায় পড়বো, কোন বই থেকে পড়বো। উচ্চমাধ্যমিক বা এইচএসসির পাশাপাশি কিভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার জন্য পড়ে নিজের প্রস্তুতিকে সহজ করে অন্য দশজনের থেকে নিজেকে আলাদা করে এগিয়ে রাখবো। নিজের স্বপ্নের পথে অন্যদের থেকে নিজেকে একধাপ এগিয়ে রাখবো। আর অনেক সময় এই কাজ গুলো করতে গিয়ে অনেক শিক্ষার্থী ভূল গাইডলাইনের জন্য ভুল ভাবে পড়ে নিজের স্বপ্নের কাছে না এসে বরং আরো বেশি দূরে সরে যায়। তাই প্রয়োজন সঠিক গাইডলাইনের, সঠিক বই সঠিক দিকনির্দেশনা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করতে হলে নিজেকে অন্য দশজন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের থেকে এগিয়ে রাখতে হলে। উচ্চমাধ্যমিক টু বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা প্রস্তুতি গাইডলাইন।


উচ্চমাধ্যমিক বা এইচএসসির সাথে সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার জন্য অল্প অল্প করে প্রিপারেশন নেওয়া খুবই বুদ্ধিমান একটি সিদ্ধান্ত। এইচএসসি পরিক্ষার জন্য যে বিষয়টি পড়বে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় সেই বিষয় থেকে প্রশ্ন হয় কি না। যদি হয় তাহলে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে কিভাবে প্রশ্ন হয় এগুলো জেনে নেয়া। যদি কোন ছাত্র বা ছাত্রী এটা বুঝতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রে কোন বিষয় পড়তে হবে আর কোন বিষয় বাদ দিতে হবে তাহলে তার প্রস্তুতি একধাপ এগিয়ে যাই। বলা হয় বিভিন্ন কম্পিটিতিভ এক্সাম যেমন BCS, ব্যাংক সহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি চাকরির পরিক্ষা, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা, মেডিকেল কিংবা ইজ্ঞিনিয়ারিং ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রে কোন বিষয় পড়তে হবে এর থেকে বেশী ইম্পর্ট্যান্ট বা গুরুত্বপূর্ণ হলো কোন বিষয় বাদ দিতে হবে স্কিপ করে যেতে হবে তা জানা। কি পড়তে হবে তা থেকে কি পড়তে হবে না তা জানা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারন কি পড়তে হবে না এই প্রশ্নের উত্তর জানলে এমনিতেই পড়ার টপিক কমে যাবে আর কম পড়ার ফলে একই বিষয় বা টপিক বেশি বেশি রিভিশনের মাধ্যমে নিজের প্রস্তুতিকে আরো বেশি ঝালিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। কি পড়তে হবে এবং কি পড়তে হবে না এটা জানার জন্য দরকার বিগত সালের প্রশ্ন বিশ্লেষণ যা পাওয়া যায় প্রশ্ন ব্যাংকে।


কিভাবে বিগত বছরের প্রশ্ন এ্যনালাইসিস করবো/প্রশ্ন ব্যাংক

বিগত বছরের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্ন ব্যাংক বিশ্লেষণ করে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে কিভাবে প্রশ্ন করা হয়, প্রশ্নের ধরন প্যার্টান সম্পর্কে আইডিয়া পাওয়া যায়। যার জন্য উচ্চমাধ্যমিকের পাশাপাশি যে বিষয় গুলো থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন হয়ে থাকে সেগুলোকে বেশি জোর দিয়ে প্র্যাকটিস করা যায়। কিভাবে প্রশ্ন হচ্ছে একটা টপিক থেকে তা ধারণা করা যায় এবং সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নেয়া যায়। বিজ্ঞান বিভাগের বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা এবং মানবিক বিভাগের বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা প্রায় বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেই একইরকম হয়ে থাকে। কিন্তু ব্যবসায় শিক্ষা শাখার শিক্ষার্থীরা বলে থাকেন যে জীবনের সব হিসেব মিলে যায় কিন্তু হিসাববিজ্ঞানের আর্থিক বিবরণীর ভুল হলে সেই ভূল আর মিলতে চায় না। বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রেও বাণিজ্য বিভাগের ক্ষেত্রে তেমনি। একেক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নের ধরন একেক রকম। আর তাই বেশিরভাগ শিক্ষার্থীকে পড়তে হয় ঝক্কি ঝামেলার মধ্যে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্ন হয় এক রকম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আরেক রকম তো রাজশাহী, চট্টগ্রাম কিংবা গুচ্ছ ভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক ধরণের। এ যেন এক মরার উপর খরার ঘা। তবে এই জায়গায় আশার কথা হলো গুচ্ছ ভুক্ত ২৪ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্ন একই হয় একসাথে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার জন্য। আরেকটি খুশির খবর হলো বাংলা, ইংরেজি এবং হিসাববিজ্ঞান প্রশ্ন বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে ই হয়ে থাকে। বাংলাদেশের একটি প্রেস্টিজয়াস বিবিএ এর নাম বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালস (বিইউপি) বিবিএ এটার প্রশ্ন পদ্ধতি হয়ে থাকে সম্পূর্ন ভিন্ন রকমের।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে লিখিত হয় না প্রশ্ন হয় বাংলা , ইংরেজি এবং হিসাববিজ্ঞান ও ম্যানেজমেন্ট থেকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্ষা হয় লিখিত এবং এমসিকিউ প্রশ্ন হয়ে থাকে বাংলা , ইংরেজি, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা ও ফিনান্স বা মার্কেটিং থেকে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্ন হয় বাংলা ইংরেজি এবং ব্যবস্থাপনা থেকে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা, ইংরেজি, গণিত এবং হিসাববিজ্ঞান থেকে আবার গুচ্ছে প্রশ্ন হয় বাংলা, ইংরেজি, হিসাববিজ্ঞান ও ম্যানেজমেন্ট থেকে।

ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করার অন্যতম পূর্বশর্ত হচ্ছে প্রশ্নের ধরন সম্পর্কে বিস্তারিত জানা আর এর জন্য প্রশ্ন ব্যাংক এর কোন বিকল্প নেই। বাজারে অনেক প্রকাশনির বিভিন্ন নামে প্রশ্ন ব্যাংক পাওয়া যায়। তবে জয়কলির প্রশ্ন ব্যাংক অনেকটাই গোছানো একটা প্রশ্ন ব্যাংক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশ্ন ব্যাংক

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্ন ব্যাংক

গুচ্ছ প্রশ্ন ব্যাংক।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্ন ব্যাংক।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্ন ব্যাংক।

বিইউপি প্রশ্ন ব্যাংক।


বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতির ক্ষেত্রে কোচিং করার প্রয়োজনীয়তা

উচ্চমাধ্যমিক থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের যে বিষয়টি নিয়ে সবচেয়ে বেশি প্যারা খায় তা হলো কোচিং করবো নাকি নিজে নিজে পড়বো না প্রাইভেট টিউটর এর কাছে পড়বো। অনেকে তো এইচএসসি সেকেন্ড ইয়ার থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং করা শুরু করে দেয়, অনেক আবার কোচিং না করে নিজে নিজে পড়ে। বর্তমানে অনেকেই আবার অনলাইনে কোচিং করে। মনে রাখতে হবে কোচিং কোন শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাইয়ে দিবে না। কোচিং একটা ভালো গাইডলাইন বা দিকনির্দেশনা দিবে। পড়া আদায় করে নিবে, মোটিভেশন দিবে। তাই কোচিং নয় নিজের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে। আমি পারবো। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আসন/ সিট আমার জন্য এই কনফিডেন্স টা ভর্তি পরীক্ষার্থীর জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তবে কনফিডেন্স ভালো অভার কনফিডেন্স নয়। সবসময় খেয়াল রাখতে হবে যেন নিজের উপর অভার কনফিডেন্স না চলে আসে। কোচিং করা কি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার বাধ্যতামূলক নাকি প্রস্তুতি নিজের কাছে তা বুঝতে হবে।


ইংরেজি ভোকাবোলারি ও গ্রামার শিখার পদ্ধতি এবং প্রয়োজনীয়তা

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় ভালো পরিক্ষার অন্যতম উপায় হচ্ছে ইংরেজিতে ভালো করা। ইংরেজিতে ভালো করার পূর্বশর্ত হচ্ছে ভোকাবোলারি ভালো করা এবং গ্রামারের ব্যাসিক ভালো জানা। উচ্চমাধ্যমিকের শুরু থেকেই ভোকাবোলারি প্র্যাকটিস এর সাইফুর্স পাবলিকেশনের সাইফু্র্স ভোকাবোলারি একটি গুরুত্বপূর্ণ বই। ভর্তি পরীক্ষায় ভোকাবুলারি ভালো করার ক্ষেত্রে এই বইয়ের বিকল্প নেই বললেই চলে। উচ্চমাধ্যমিকের শুরু থেকেই প্রতিদিন অন্তত এই বই থেকে ২০ টি করে শব্দ মূখস্থ বা শিখা উচিত। তারপর আসি ব্যাসিক গ্রামারের ক্ষেত্রে, প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি প্রশ্নের বেশিরভাগ হয়ে থাকে ব্যাসিক গ্রামার থেকে। এর জন্য উচ্চমাধ্যমিক থেকে রফিক স্যারের নিড বইটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকারী একটি বই।


নিজের দুর্বলতা খুঁজে বের করে তা দূর করা

বলা হয় পরিশ্রম সফলতার চাবিকাঠি। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় মেধাবীদের থেকে পরিশ্রমিরা বেশি এগিয়ে থাকে। পরিশ্রমিরা বার বার একই টপিক পড়ে নিজের দুর্বলতা খুঁজে বের করে তার উপর সময় দেয়। নিজের ইউক পয়েন্ট গুলোতে বেশি সময় ও শ্রম দিয়ে নিজের প্রস্তুতিকে আরো বেশি ঝালিয়ে নেয়। উচ্চমাধ্যমিকের শুরু থেকেই নিজের দুর্বলতা গুলো নিয়ে কাজ করার ফলে ভর্তি পরীক্ষা আসার আগেই তার এর প্যার্টান নিজের দুর্বলতা সব জানা থাকে।এতে করে অন্যরা যখন সব পড়তে ব্যাস্ত তখন নিজের দুর্বলতা গুলোতে বেশি সময় দিয়ে নিজেকে অন্যদের থেকে এগিয়ে রাখা যায়।


ঘড়ি ধরে প্র্যাকটিস/অনুশীলন করা

বিশ্ববিদ্যালয় সহ সব ধরনের কম্পিটিভিভ এক্সামের একটা নিয়ম বাধাধরা নির্দিষ্ট সময়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় দেখা যায় একটি এমসিকিউ প্রশ্নের ৪৫ সেকেন্ড সময় পাওয়া যায় গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ১ মিনিট ১০ সেকেন্ডের মতো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫০ সেকেন্ড এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৫ সেকেন্ডের মতো।এতো কম সময়ের জন্য বেশিরভাগ পরিক্ষার্থী নিজের আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে যার জন্য অনেক ভালো ছাত্র ছাত্রী অনেক গুছানো ও ভালো প্রস্তুতি থাকার পর ও পরিক্ষায় ভালো করতে পারে না। ফলশ্রুতিতে তার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন মাঠে মারা যায়।তাই সময় এর উপর খেয়াল রাখতে হবে। দ্রুততার সাথে উত্তর করার জন্য বেশি বেশি পরিক্ষা দেয়ার অনুশীলন করতে হবে। ঘড়ি ধরে বেশি বেশি মডেল টেস্ট ও পরিক্ষা দিতে হবে।ঘড়ি ধরে বেশি বেশি মডেল টেস্ট পরীক্ষা দেওয়ার জন্য নিজের উপর কনফিডেন্স লেভেল গ্রো হবে প্রশ্নের সঠিক উত্তরের অ্যকুরেসি বাড়বে, নির্দিষ্ট সময়ের মাঝে পরিক্ষায় উত্তর করার ট্র্যাকটিস বাড়বে। এতে করে নিজের দুর্বলতা কমে যাবে। পরিক্ষার হলে নার্ভাসনেস কমে যাবে।


পড়া এবং কনসেপ্ট ক্লিয়ার রাখা

ভর্তি পরীক্ষা সহ যেকোন চ্যালেঞ্জিং পরিক্ষায় ভালো করার ক্ষেত্রে একটাই মূলমন্ত্র আরো তা হলো পরিক্ষা সম্পর্কে এবং প্রশ্ন সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা থাকা। পরিক্ষাটা কেমন, কি পরিমান উত্তর করতে হবে , কতো মার্ক পেলে সেফ জোন, প্রশ্ন কেমন হয়েছে বিগত বছরের তুলনায় এসব বিস্তারিত কনসেপ্ট প্রশ্ন হাতে নিয়ে বুঝতে পারলে পরিক্ষা হলের অর্ধেক টেনশন চলে যায়। কি বিষয় থেকে প্রশ্ন হয় প্রতিনিয়ত, কি ভাবে হয় , কি ধরনের হয় এসব বিষয়েও কনসেপ্ট বা ধারণা ক্লিয়ার থাকতে হবে। তাহলে সফলতার পথে এগিয়ে থাকা হবে। মনে রাখতে ভালো করতে হলে ভালো করে বুঝে, কনসেপ্ট ক্লিয়ার করে বই পড়ার বিকল্প নেই। আর এর জন্য পড়তে ভালো মানের বই। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির ক্ষেত্রে বাণিজ্য শাখার অনেক বই বাজারে পাওয়া যায় তার মধ্যে প্যারাগান পাবলিকেশনের বই অন্যতম। শুধু বই পড়লেই হবে না বইয়ে তো সব বিষয়েই আলোচনা করা থাকে কিন্তু ভালো করতে হলে বিগত বছরের প্রশ্ন গুলো এ্যনালাইসিস করে গুরুত্বপূর্ণ টপিক গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ক্লিয়ার কাট কনসেপ্ট থাকতে হবে। তাহলে প্রিপারেশন সহজ হবে।

বাণিজ্য বা ব্যবসায় শিক্ষা শাখার বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতির সকল বই।


কি বই পড়বো/কোন বই বেশি ভালো

এখন প্রশ্ন হলো বাজারে তো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য অনেক প্রকাশনীর অনেক বই পাওয়া যায় আমি কোনটা পড়বো। কোন বই বেশি ভালো। কোন বিষয়ের জন্য কোন বই বেশি ইফেক্টটিভ।


বাংলা প্রস্তুতির জন্য বই বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার জন্য 

বাংলা বিষয়ের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরিক্ষা জন্য বাজারে অনেক প্রকাশনীর বই পাওয়া যায়। তবে বর্তমানে অনেক সুন্দর করে গুছিয়ে সব বিষয়ে আলোচনা করা গদ্য,পদ্য, সহ পাঠ এবং ব্যাকারণের জন্য একটি আদর্শ বই হলো আবু বকর সিদ্দিক রচিত অভিযাত্রি বাংলা সাহিত্যে ও ব্যকারণ লিখিত ও এমসিকিউ এবং বিরচন অংশের জন্য অভিযাত্রি ATM একটানা মূখস্ত। এছাড়াও কবিতার জন্য অনেক ভালো একটা বই হলো বাংলা এ প্লাস। কবিতা, গল্পের আরেকটি নির্ভরযোগ্য বই হলো সাহিত্য সঞ্চালন।


ভর্তি পরীক্ষার ইংরেজি প্রিপারেশনের বই

ভর্তি পরীক্ষায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ইংরেজি কারণ অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে আলাদা করে পাশ নম্বর রয়েছে। এছাড়াও ইংরেজিতে ভালো একটা মার্ক পেলে অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকা যায়। সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির ক্ষেত্রে অন্য ইউনিটের সাথে বাণিজ্য বিভাগের ইংরেজি প্রশ্নের মিল থাকে না। কমার্সের ইংরেজি প্রশ্নের ধরন অন্য ইউনিটের থেকে ভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। তাই ইংরেজি ভালো করতে Adroit বইটা অনেক সহায়ক। সেই সাথে প্র্যাকটিস এর জন্য English For Competitive Exam.


হিসাববিজ্ঞান কোন বই ভালো বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির ক্ষেত্রে 

বাংলা ও ইংরেজি প্রস্তুতির কথা তো গেলো এবার আসি হিসাববিজ্ঞান প্রস্তুতির কাছে। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করতে হলে কমার্সের গ্রুপ সাবজেক্ট গুলোতে ভালো করার কোন বিকল্প নেই। উচ্চমাধ্যমিকে ছাত্র ছাত্রীরা হিসাববিজ্ঞান পড়ে থাকে পুরোটাই গাণিতিক কিন্তু ভর্তি পরীক্ষায় উল্টো বেশিরভাগ প্রশ্ন হয় তত্ত্বীয়। আর উচ্চমাধ্যমিকের বেশিরভাগ বইয়ে তত্ত্বীয় বিষয় গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা অনেক কম। তাই পরিক্ষার্থীকে হিসাববিজ্ঞান প্রস্তুতির ক্ষেত্রে অনেক বেশি বেগ পোহাতে হয়, অনেক সময় দিতে হয়। হিসাববিজ্ঞানের ভালো প্রিপারেশনের ভালো একটা বইয়ের বিকল্প নেই। সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রে প্যারাগন পাবলিকেশনের RABS বইটি অনেক ভালো এবং সহায়ক। বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া বেশিরভাগ শিক্ষার্থী হিসাববিজ্ঞান প্রস্তুতির জন্য এই বইটি পড়ে থাকে।


ব্যবস্থাপনা কোন বই বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় সহায়ক

বাণিজ্য বিভাগের বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় অন্য পরিক্ষার্থী থেকে যে বিষয়টি একজন শিক্ষার্থীকে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে রাখতে সহায়তা করে তা হলো ব্যবস্থাপনা। ব্যবস্থাপনা অপেক্ষাকৃত অন্য বিষয়গুলোর থেকে সহজ হওয়ার জন্য এটাই ভালো করার মাধ্যমে মার্ক বাড়িয়ে মেধাতালিকায় নিজেকে এগিয়ে রাখা সম্ভব। ব্যবস্থাপনায় ভালো করার জন্য একটি বই খুব সুন্দর ও ভালো করে পড়াই যথেষ্ট তা হলো Fundamentals of Business.


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং ও ফিনান্স প্রিপারেশনের বই

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি যে প্রশ্নটা করে তা হলো আমি তো মার্কেটিং পড়ি নি আমি কি মার্কেটিং উত্তর করতে পাড়বো বা আমি তো ফিনান্স পড়ি নি আমি কি ফিনান্স উত্তর করতে পাড়বো। এর উত্তর হলো হ্যা পারবে। উচ্চমাধ্যমিক তুমি মার্কেটিং বা ফিনান্স পড়েছো কি পড়ো নাই তাতে কোন কিছু না তুমার যেটা ইচ্ছে তুমি সেটাই উত্তর করতে পাড়বে। তবে হ্যাঁ লিখিত এবং এমসিকিউ একই বিষয় উত্তর করতে হবে। এবার আসি মার্কেটিং ও ফিনান্স প্রিপারেশনের বইয়ের ব্যাপারে। মার্কেটিং এর Fundamentals of Marketing এবং ফিনান্স এর জন্য Fundamentals of Finance বইটি যথেষ্ট। পাশাপাশি উচ্চমাধ্যমিকের বইগুলোও সহায়ক।


ঢাবি বাণিজ্য/গ ইউনিটের লিখিত পরিক্ষায় ভালো করার বই

লিখিত পরিক্ষা হয় শুধু মাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং লিখিত পরীক্ষায় ভালো না করলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাতালিকায় স্থান পাওয়া কষ্টকর। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লিখিত পরিক্ষার প্রস্তুতি অনেক ভালো করে নিতে এবং এর জন্য প্যারাগণ পাবলিকেশনের লিখিত সহায়িকা বইটি অনেক ভালো।


বাণিজ্য বিভাগের/সি ইউনিটের বিশ্ববিদ্যালয়ে সিট সংখ্যা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গ ইউনিটের আসন সংখ্যা ৯৫০ টি এর মধ্যে ৮৫৯ টি সাধারণ আসন। বাকিগুলো কোটা এবং বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাণিজ্য বিভাগের মোট আসন ৪৬০ টি যার মধ্যে মাত্র ২২০ টি আসন ব্যবসায় শিক্ষা শাখার শিক্ষার্থীদের জন্য, ১৭৬ টি বিজ্ঞান ও ৪৪ টি মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের মোট আসন সংখ্যা ৫০৬ টি।জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের মোট আসন সংখ্যা ২০০ টি যার মধ্যে ৮০ টি করে ব্যবসায় শিক্ষা শাখার ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য বরাদ্দ বাকি ২০ করে সিট মানবিক ও বিজ্ঞান ছাত্র ছাত্রীদের জন্য বরাদ্দ।গুচ্ছ ভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের মোট আসন সংখ্যা ২৩১০৪ টি যার মধ্যে মাত্র ৪৬৩৬ টি আসন বাণিজ্য বিভাগের বা বিবিএর। এগুলোর মধ্যে আবার বিজ্ঞান বিভাগের, মানবিক বিভাগের ও কোটার আসন বরাদ্দ রয়েছে। সারাদেশে সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় মিলিয়ে বিবিএ করার জন্য অনুমানিক ৮০০০ রয়েছে এর মধ্যে প্রায় ১৫০০ এর মতো সিট বিজ্ঞান, মানবিক ও কোটার জন্য বরাদ্দকৃত।


নবীনতর পূর্বতন

ছবি: দ্য ডেইলি পাবলিকিয়ান